অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং দলের প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা রওশন এরশাদ। মঙ্গলবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে তাদের মধ্যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তারা প্রায় পৌনে এক ঘণ্টার মতো বৈঠক করেন। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পার্টিকে আরও শক্তিশালী হতে পরামর্শ দিয়েছেন।
এ সময় তাদের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ছেলে দলের সংসদ সদস্য রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদও ছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়টি নিশ্চিত তরে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদের বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) আমাদের ডেকেছিলেন। ম্যাডাম রওশন এরশাদ ফিরেছেন, সৌজন্য সাক্ষাৎ ছিল। আলোচনা ছিল সৌজন্য বিনিময়। স্বাভাবিক কথাবার্তা হয়েছে। ৩০-৪০ মিনিটের মতো ছিলাম।’
কী বিষয়ে আলোচনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী, এমন প্রশ্নের জবাবে জিএম কাদের বলেন, ‘উনি চান জাতীয় পার্টি স্ট্রং হোক। নির্বাচন নিয়ে কোনও আলোচনা হয়েছে কিনা— জানতে চাইলে জাপা চেয়ারম্যান জানান, এগুলো আমরা নিজেদের ফোরামে আলাপ করি।’
সাক্ষাতের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মঙ্গলবার দুপুরে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জাতীয় পার্টির নেতারা এক সৌজন্য সাক্ষাতে মিলিত হন। এ সময় জাতীয় পার্টির পক্ষে জাতীয় সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা বেগম রওশন এরশাদ, এমপি; বিরোধী দলীয় উপনেতা ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের এমপি এবং সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ছেলে রাহগির আলমাহি সাদ এরশাদ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠককালে প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলীয় নেতার শারীরিক খোঁজ-খবর নেন এবং কুশল বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী সংসদীয় গণতন্ত্রে গঠনমূলক ও ইতিবাচক ভূমিকা পালনের জন্য জাতীয় পার্টিকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর যেকোনও দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে বিরোধী দলগুলোর দায়িত্বশীল ভূমিকার বিষয়ে আলোচনা করেন। জাতীয় পার্টির নেতারা বলেন, স্বাধীন বাংলাদেশে আজ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের পর একটি স্থিতিশীল গণতন্ত্রিক ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে। যার সুফল বাংলাদেশের জনগণ ভোগ করছে এবং দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে। জাতীয় পার্টি তার রাজনৈতিক অবস্থান থেকে দেশে গণতন্ত্র ও সাংবিধানিক সরকার ব্যবস্থা বজায় রাখতে বদ্ধ পরিকর এবং জাতীয় পার্টি এ লক্ষ্যে প্রধান বিরোধী দল হিসেবে সংসদ ও সংসদের বাইরে গঠনমূলক ও কার্যকর ভূমিকা পালন করে যাবে।
দীর্ঘ ৫ মাস থাইল্যান্ডে চিকিৎসাধীন থেকে গত ২৭ নভেম্বর দেশে ফেরেন রওশন এরশাদ।
প্রসঙ্গত, জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও সংসদ উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদেরপন্থী ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক সংসদ নেতা রওশন এরশাদপন্থীদের মধ্যে বেশ কিছুদিন দলে টানাপোড়েন ছিল। এক পর্যায়ে বিষয়টি প্রকাশ্য রূপ নেয়। এ প্রেক্ষাপটে রওশন এরশাদ দলের জাতীয় সম্মেলনের তারিখ ঘোষণা করেন। পরে অবশ্য তা প্রত্যাহার করা হয়। এদিকে দলের বেশিরভাগ সংসদ সদস্যদের স্বাক্ষরে রওশনকে বিরোধী দলের পদ থেকে সরিয়ে জিএম কাদেরকে এ পদে বসাতে স্পিকারকে চিঠি দেওয়া হয়। পরে মসিউর রহমান রাঙ্গা ওই চিঠিকে অবৈধ উল্লেখ করে স্পিকারকে পাল্টা চিঠিও দেন। রওশনকে বাদ দিয়ে জিএম কাদেরকে বিরোধী দলের নেতা করার চিঠি স্পিকারের দফতরে ঝুলে রয়েছে। অবশ্য থাইল্যান্ড থেকে ফেরার পরে জিএম কাদের ও রওশন এরশাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়।
Leave a Reply